গ্রামীণ জীবনে কৃষি বীমার উপকরিতা
ভুমিকাঃ কৃষি বিমা হল একটি বিমা ধরন যা কৃষকদের ফসল সম্পদ বা কৃষকদের কৃষি বিষয়ক যন্ত্রপাতি হানির জন্য সুরক্ষা প্রদান করে।
কৃষি বিমা কত প্রকার ও কি কি:
কৃষি বিমা বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে, যেমন ফসল বিমা, পশু বিমা, জলাভূমি বিমা ইত্যাদি। এই বিমা প্রকারগুলি প্রায় অনেক সময়
একসাথে প্রদান করা হতে পারে, যা কৃষকের সম্পদ ও অনুসন্ধানের জন্য সাহায্য করে।
ফসল বিমা:
ফসল বিমার মাধ্যমে ফসল সংক্রান্ত প্রাকৃতিক বা মানবিক ঝুঁকির জন্য কৃষকদের ফসল নষ্ট হওয়ায় আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করে থাকে। আরো যেমন, অনুমান মতে একটি বিরল বর্ষা বা পুরো ফসলের নষ্ট হওয়া একটি ঝুঁকি হতে পারে। ফসল বিমা এই ধরনের ঝুঁকির বিরুদ্ধে কৃষকদের সম্পদ সুরক্ষা করে থাকে।
পশু বিমা:
পশুবীমা হল একটি বিমা ধরন যা পশুর সম্পদের সুরক্ষা প্রদান করে। এই ধরনের বিমা পশুর মৃত্যু, অসুখ, চুচ্চুর ইত্যাদির জন্য কৃষকের সাহায্য করে।
জলবায়ু বিমা:
জলবায়ু বিমার মাধ্যমে বিভিন্ন জলবায়ুজনিত প্রতিকূল পরিবেশে কৃষকদের ফসলের নানাবিদ ক্ষতি হতে পারে এমন ঘটনার জন্য সুরক্ষা প্রদান করে, যেমন আপাতত তুফান, শিলা বৃষ্টি,বৃষ্টিপাত, জলপ্রবাহ, ভারী ওলা ইত্যাদি। এই বিমা প্রকারটি প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা থেকে সংরক্ষণ করে এবং এছাড়াও অতিরিক্ত আর্থিক লোকাপবিত সহায়তা প্রদান করে।
তাছাড়াও আরো কিছু কৃষি বিমার প্রকারভেদ হলো:
কৃষি বিমা হতে পারে সাধারণ রোগ বা পোকামাকড়ের হামলা, ফসল সংক্রান্ত রোগ ও পারজীবী সমস্যা, আবহাওয়ায় প্রকোপিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বাতাস, সেচ ও জলবায়ু সমস্যা, মাটির পুষ্টিমূলক অধীনে ফলনের কম্পাংক এবং জৈববৈধানিক প্রতিরোধ। এছাড়াও, পৌষ্টিকতা বা রাসায়নিক মেটারিয়াল সংক্রান্ত সমস্যাও হতে পারে। প্রতিটি প্রকারের বিমার প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার পদক্ষেপ ভিন্ন হতে পারে এবং এটি অধিকতর প্রতিটি ফসলের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর।
পরজীবী সমস্যায় কৃষি বিমা:
পরজীবী সমস্যায় কৃষি বিমা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। পরজীবী বা কীটপতঙ্গের হামলা ফসলের অপসারণে এবং ফলনের নিম্নতা উপস্থিতির মাধ্যমে বাজার মূল্যের পতনের কারণ হতে পারে। কৃষি বিমা এই ধরনের ঝুঁকিগুলি থেকে কৃষকদের সুরক্ষা ও আর্থিক সহায়তা সরবরাহ করে। এটি পরজীবী হামলা বা সাধারণ কীটপতঙ্গের উপর নির্ভর করে এবং প্রযুক্তিগত পরিপ্রেক্ষিতে কৃষকদের বাজার ঝুঁকি অনুমোদন করে। কৃষি বিমা সহায়তা করে ফসল চাষে প্রতিবেদন করা, উচ্চ ফলন ও পূর্ণতা প্রাপ্তি সহ কৃষকদের উপার্জনে সাহায্য করে।
কৃষি বিমার গুরুত্ব:
কৃষি বিমা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের খাদ্য সরবরাহের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কৃষি বিমার মাধ্যমে সঠিক পরিপ্রেক্ষিত ও সুস্থ ফসল নিশ্চিত করা যায়। বিমার ব্যবস্থাপনা কৃষকদের জীবনধারা ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা বাড়াতে পারে।
কৃষি বিমার প্রয়োজনীয়তা:
কৃষি বিমার প্রয়োজনীয়তা অনেক সমৃদ্ধ। এটি বিশেষভাবে প্রয়োজন যেন বিশেষভাবে অসুস্থ ফসল বা পেষা সংক্রান্ত সমস্যার পরিহার, ফসল বাড়ানোর উপায়, কৃষকদের শিক্ষার প্রয়োজন, পরিবেশের সমর্থন, পরিমিত সামগ্রী ব্যবস্থাপনা, ও কৃষি বিপণনের উন্নতির জন্য বৈজ্ঞানিক এবং প্রয়োজনীয় তথ্য। এছাড়াও, বাণিজ্যিক ও সার্ভিস প্রদানকারীরা অনেক সহায়ক হতে পারেন কৃষকদের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণে।
কৃষি বিমা করার নিয়ম:
কৃষি বিমা করার নিয়ম প্রতিষ্ঠানের নীতি এবং সরকারি বা বেসরকারি নীতিমালার উপর নির্ভর করে। সাধারণত, কৃষি বিমার জন্য আবেদনকারী কৃষকের অবশ্যই নির্দিষ্ট ফসল সম্পর্কিত থাকতে হয়। কৃষি বিমা করার নিয়ম এবং শর্তাবলী বিভিন্ন দেশের মধ্যে পরিবর্তন করতে পারে, কিন্তু কিছু মূল পদক্ষেপ সাধারণত একই থাকে:
1. আবেদন: কৃষকদের অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কৃষি বিমা করার জন্য আবেদন করতে হয়।
2. বিমা প্রাধান্য: বিমা প্রাধান্য সর্বোচ্চ ফসলের জন্য এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য নির্ধারিত হতে পারে।
3.প্রিমিয়ার পরিশোধ: বিমা প্রিমিয়ার পরিশোধ করতে হয়, যা সাধারণত ফসলের মূল্যের এক নির্দিষ্ট অংশ হয়।
4. দাবি সম্পর্কিত প্রক্রিয়া: আপাতত বা ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে, কৃষকদের অবশ্যই তা সরকারি বা বিমা প্রতিষ্ঠানে দাবি করতে হয়।
5.প্রদত্ত প্রমাণ: প্রমাণ করা প্রয়োজন যে ফসল বা মালামাল বাস্তবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
6.বীমা কভারেজ: বিমা নীতি কোনও নির্দিষ্ট ফসল বা ফসলের বিশেষ ধরণের জন্য মন্য হতে পারে। এছাড়াও, কিছু নীতি প্রকার মালামালের জন্যও সুরক্ষা প্রদান করে।
7.প্রদত্ত সহায়তা: ফসলের হানির পরে, কৃষকদের সাধারণত অনেক প্রকারের সহায়তা প্রদান করা হয়, যেমন ফসল পুনরুদ্ধার, অর্থনৈতিক সাহায্য, বা বিমা প্রাধিতা প্রদান।
এছাড়াও, কিছু দেশে সরকারি কৃষি বিমা প্রোগ্রাম রয়েছে যা সরকারি অথবা বেসরকারি কৃষি বিমা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
কৃষি বিমার মেয়াদকাল:
কৃষি বিমা সংক্রান্ত মেয়াদকালের বিষয়টি বিশেষভাবে প্রতিষ্ঠানের নীতি এবং বিমাকে ব্যবহার করার উপর নির্ভর করে। অনেক সংস্থা বিভিন্ন মেয়াদকাল অনুযায়ী কৃষি বিমা সরবরাহ করে। সর্বাধিক মেয়াদকাল সাধারণত এক বছর থেকে শুরু হয় এবং বৃহত্তর প্রকল্পগুলিতে তা বেশি হতে পারে। তবে, বিমা প্রতিষ্ঠানের নীতি এবং বাস্তব সংক্রান্ত বিবরণ জেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য যদি কোনো ব্যক্তি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কৃষি বিমা কিনতে চাই সে ক্ষেত্রে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে কৃষি বিমা সম্পর্কে সব ধরনের নীতিমালা জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
কৃষি বিমার মূল শর্তাবলী:
কৃষি বিমার মূল শর্তাবলী বিভিন্ন কোম্পানি এবং প্রোডাক্টের মধ্যে ভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণত এটি নিম্নলিখিত উপায়ে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়:
1.কীভাবে বিমা ক্রয় করতে হবে: কীভাবে এবং কোন প্রকারের ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে তা সম্পর্কে নির্দেশনা থাকতে পারে।
2.বীমা অনুমোদনের শর্তাবলী:বিমা অনুমোদনের জন্য কি শর্ত অনুমোদন করা হবে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে পারে।
3.বীমা প্রদানের শর্তাবলী: যে সকল অগ্রিম অনুদান এবং তার মেয়াদ নির্ধারণ করা থাকে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়।
4.বীমা ক্লেমের প্রক্রিয়া:যে কোন ক্লেমের জন্য কি ধরণের ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে এবং সময়সীমা কি থাকবে তা সম্পর্কে নির্দেশনা থাকতে পারে।
5.বীমা কভারেজের মেয়াদ:বীমা কভারেজের মেয়াদের উল্লেখ থাকতে পারে, যেটা সাধারণত এক বছরের মধ্যে থাকে।
এই শর্তাবলীগুলি মূলত বীমা কোম্পানির নীতি অনুযায়ী পরিবর্তন করতে পারে। তাই বীমা ক্রয় করার আগে সতর্কতা সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জানা জরুরি।
কৃষি বিমা প্রধান করে এমন কিছু সরকারি বা সরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহ:
কৃষি বীমা সম্পর্কে অনেক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বীমা কর্পোরেশন (বিবিকে) অন্তর্ভুক্ত।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন বীমা কোম্পানি কৃষি বীমা সেবা প্রদান করে।
বাংলাদেশে কৃষি বীমা সেবা প্রদান করার জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিম্নলিখিত কিছু প্রধান প্রতিষ্ঠান রয়েছে:
1. প্রামাণ্য বীমা কোম্পানি।
2. গ্রীন ডেলটা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
3. প্রোগ্রেসিভ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
4. ডেলটা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
5. প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
এগুলো কৃষি বীমা সেবা প্রদান করতে পারে।
তাই প্রতিটা কৃষকেরই উচিত ফসল সংক্রান্ত ভবিষ্যতে ফসল হানির সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কৃষি বিমা করা প্রয়োজন। এতে করে কৃষকের ব্যক্তিগত এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বৃদ্ধি পেতে পারে